নিজস্ব পথ গড়ে নিচ্ছেন শাটলার শঙ্কর

চেন্নাইয়ের তরুণ শাটলার শঙ্কর মুথুস্বামী সুব্রমানিয়নের জন্য ২০২৫ সালটি শুরু হয়েছে ইতিবাচকভাবে। ২০২৪ সালের ব্যর্থতা, যেখানে তিনি বেশিরভাগ টুর্নামেন্টেই কোয়ালিফাইং রাউন্ডে আটকে গিয়েছিলেন, তা পেছনে ফেলে তিনি আবার নিজেকে নতুন করে গড়ে তুলছেন।
২১ বছর বয়সী এই ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় ২০২২ সালে জুনিয়র বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে উঠে আসেন এবং সেই বছরই বিএডব্লিউএফ ওয়ার্ল্ড জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপসের পুরুষ এককে ফাইনালেও পৌঁছান। ২০২৩ সালে সিনিয়র পর্যায়ে উত্তরণ করার পর, তিনি লুক্সেমবার্গ ওপেনসহ একাধিক ফাইনালে খেলে নজর কেড়েছিলেন। কিন্তু ২০২৪ সালে তার পারফরম্যান্সে স্থবিরতা দেখা যায়।
তবে নতুন বছরে থাইল্যান্ড মাস্টার্স ও সুইস ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে শঙ্কর ফের আলোচনায় এসেছেন। বিশেষ করে সুইস ওপেনে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে দুই নম্বরে থাকা এবং তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ পদকজয়ী ডেনিশ খেলোয়াড় আন্দেরস আন্তোনসেনকে হারিয়ে সবার নজর কেড়েছেন তিনি। তৃতীয় সেটে ২১-৫ ব্যবধানে জয়টা ছিল তার জন্য উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
জাকার্তায় এক মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ শিবির থেকে শঙ্কর জানান, “২০২৫ সালটা আমার জন্য ভালোই চলছে। থাইল্যান্ড মাস্টার্স থেকে শুরু করে একের পর এক ভালো ম্যাচ খেলছি। জানুয়ারিতে তিন সপ্তাহ ধরে আমরা কঠোর অনুশীলন করেছি, যার ফল এখন মিলছে।”
এই ধারাবাহিক উন্নতির ফলস্বরূপ মঙ্গলবার তিনি নিজের ক্যারিয়ারের সেরা র্যাঙ্কিং, ৫৬ নম্বরে উঠে এসেছেন। তবে শঙ্করের লক্ষ্য এখানেই থেমে নেই। একজন অবসরপ্রাপ্ত বন্দর কর্মচারী ও গৃহবধূর ছেলে শঙ্কর জানেন, বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে সেরা ৩২-এ প্রবেশ না করা পর্যন্ত বড় টুর্নামেন্টে খেলাটা কঠিনই হবে।
“আমার যত দ্রুত সম্ভব সেরা ৩২-এ প্রবেশ করতেই হবে। তবেই আমি সুপার ১০০০ সহ সব বড় টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাব। এটা এখন আমার প্রধান লক্ষ্য,” বলেন শঙ্কর, যিনি চেন্নাইয়ের মোগাপাইরের ফায়ারবল ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমিতে আরবিন্দ সামিয়াপ্পনের অধীনে অনুশীলন করছেন।
প্রকৃতিগতভাবে তিনি একজন ডিফেনসিভ খেলোয়াড়। তার খেলা ধীরস্থির, কৌশল নির্ভর এবং শট তৈরি করার ক্ষমতা বেশ নিখুঁত। তবে শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছাতে গেলে আক্রমণাত্মক খেলার দিকটাও জোর দিতে হবে বলে মনে করেন শঙ্কর। আর সে কারণেই বর্তমানে তিনি ইন্দোনেশিয়ায় আছেন।
“আমি মূলত রক্ষা নির্ভর খেলোয়াড়। শাটল রিট্রিভ করতে ভালোবাসি। কিন্তু গত কয়েক মাসে আমার আক্রমণাত্মক শটগুলো অনেক নিখুঁত হয়েছে। আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি আক্রমণ করছি। তবে আরও উন্নতি করতে হবে, যাতে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ বজায় রাখা যায়,” বলেন তিনি।
চলতি মাসের ১ তারিখে জাকার্তায় পৌঁছানোর পর থেকে শঙ্কর ইন্দোনেশিয়ার তরুণ খেলোয়াড়দের সঙ্গে অনুশীলন করছেন। এখানে তার প্রশিক্ষক প্রাক্তন ইন্দোনেশিয়া জাতীয় পুরুষ একক কোচ হ্যারি হার্তোনো, যিনি এশিয়া ও অল ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন জনাথন ক্রিস্টির মতো খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।