শ্রীনগরে শুরু হচ্ছে চিনার বইমেলার দ্বিতীয় সংস্করণ

দেশজুড়ে অংশগ্রহণ, ২০০টিরও বেশি প্রকাশনা সংস্থার উপস্থিতি

আগস্টের ২ তারিখ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় চিনার বইমেলা। নয়দিনব্যাপী এই বৃহৎ সাহিত্য উৎসবে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ২০০-রও বেশি প্রকাশনা সংস্থা ও বইয়ের স্টল অংশগ্রহণ করবে।

উৎসবটি আয়োজন করছে ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট (NBT)। উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ও জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা। অনুষ্ঠানস্থল হবে ডাল লেক সংলগ্ন SKICC।

ভাষার বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সাহিত্য উৎসব

আয়োজকেরা জানিয়েছেন, গত বছরের প্রথম সংস্করণে দর্শকদের অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়ার পর এবারের আয়োজন আরও বিস্তৃত ও বৈচিত্র্যময়। মেলায় ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু, কাশ্মীরি সহ বিভিন্ন ভারতীয় ভাষার বই প্রদর্শিত হবে।

ছোটদের জন্য দ্বিভাষিক বই থেকে শুরু করে একাডেমিক রচনাবলি, আঞ্চলিক সাহিত্য এবং ডিজিটাল বিষয়বস্তুও থাকছে এবারের সংগ্রহে। সব বয়সের পাঠকদের জন্য থাকবে আকর্ষণীয় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পছন্দের সুযোগ।

শুধু বই নয়, জ্ঞানের মঞ্চ

ন্যাশনাল বুক ট্রাস্টের ডিরেক্টর যুবরাজ মালিক জানিয়েছেন, এবারের বইমেলা কেবল বই প্রদর্শনী নয়, বরং এটি এক বুদ্ধিবৃত্তিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক সংলাপের কেন্দ্র হয়ে উঠবে।

বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে ‘রাজতারঙ্গিণী সংবাদ’—একটি কর্মশালা ও প্যানেল আলোচনার সিরিজ, যেখানে ঐতিহাসিক কাশ্মীরি গ্রন্থটির সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক দিক নিয়ে আলোচনা হবে।

ভাষা ও সংস্কৃতির সেতুবন্ধন

মেলায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হবে প্রাচীন শারদা লিপি নিয়ে জাতীয় প্রদর্শনী এবং গুজরী অনুবাদ কর্মশালা, যেখানে হিন্দি, উর্দু, ডোগরি, কাশ্মীরি ও ইংরেজি ভাষায় দ্বিভাষিক বই প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি ভারতের ভাষাগত বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তিকে উৎসাহ দেবে।

একইসঙ্গে, ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হবে ‘তামিল-কাশ্মীরি সংলাপ’, যেখানে দুই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের মিলন তুলে ধরা হবে।

প্রতিদিন তিনটি ভাগে সাজানো অনুষ্ঠানসূচি

প্রতিদিনের কার্যক্রম তিনটি ভাগে বিভক্ত থাকবে: সকালে শিশুদের জন্য বিশেষ কার্যক্রম, দুপুরে বই প্রকাশ ও লেখক-সাহিত্যিকদের সঙ্গে আলাপচারিতা এবং সন্ধ্যায় স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনা।

সবার জন্য উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার

মেলায় প্রবেশ থাকবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। বই কেনাকাটায় থাকছে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা, জানিয়েছেন আয়োজকেরা।

চিনার বইমেলার এই আয়োজন শুধুমাত্র একটি সাহিত্য উৎসব নয়, বরং এটি একটি জ্ঞান ও সংস্কৃতির মিলনমেলা, যা পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে ও সমাজে সংলাপের পরিসর প্রসারিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।